সন্দ্বীপ সমুদ্র সৈকত, চট্টগ্রাম ( Sandwip )
সন্দ্বীপ (Sandwip) বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি দ্বীপ (Sandwip Samudra
Saikot)। এটি মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত প্রাচীন একটি দ্বীপ।
সন্দ্বীপের প্রত্যেকটি জায়গা দেখার মত – ফসল ভরা মাঠ, সবুজ প্রকৃতি, হাট ,বাজার সব কিছুই। দ্বীপের উত্তর থেকে দক্ষিণের সব প্রান্ত ঘুরে দেখতে পারেন অনায়াসে। দ্বীপের উত্তরে দেখতে পারেন তাজমহলের আদলে নির্মিত শত বছরের পুরনো মরিয়ম বিবি সাহেবানী মসজিদ। আছে মসজিদ সংলগ্ন বড় দিঘী, মাজার।
দ্বীপের দক্ষিণে আছে ঐতিহ্যবাহী শুকনা দিঘী। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য মসজিদ, স্কুল, মাদ্রাসা, বড় বড় খেলার মাঠ। ভাগ্য ভালো থাকলে দেখতে পারবেন বাউল জারী সারি গানের আসর। আরও বেড়ানো যায় সন্দ্বীপের উত্তরদিকে আমানুলার চর, উত্তর-পূর্ব দিকে উড়ির চর, কালাপানি, দক্ষিণ দিকে কালিয়ার চর।
বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় কাম্পিংয়ের জন্য সন্দ্বীপ একটি আদর্শ স্থান। সেটা অনেক আনন্দের / উপভোগ্য হবে । এক্ষেত্রে স্থানীয়দের সাহায্য নিতে পারেন উপযুক্ত জায়গা নির্বাচন করার জন্য। সঠিক জায়গা বেছে নিয়ে তাঁবু করে ফেলুন, সাথে থাকবে রাতের তারার মিটিমিটি আলো, খোলা আকাশের নিচে নদীর কলকল ধ্বনি।
ক্যাম্পিং করার সেরা সময় হল শীতকাল, ঘন কুয়াশাময় কয়েকটি রাত পার করে দিতে পারবেন অনায়াসেই। দ্বীপের মানুষজন অত্যন্ত আন্তরিক এবং সহযোগী মনোভাব পূর্ণ। এছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিনিস আপনি পেয়ে যাবেন সহজেই। নিজেরা বাজার করে খাবার তৈরি করে নিতে পারেন। নদীর মাছ, মাংস থেকে শুরু করে শীতের পিঠা সব কিছুই পাবেন বাজারগুলোতে। আর শীত মৌসুমের সবচেয়ে সুস্বাদু খাবার হল খেজুরের রসের সিন্নি। এছাড়া দ্বীপের বিখ্যাত মিষ্টি খেতে পারেন, সেটার জন্য আপনাকে দ্বীপের দক্ষিণে শিবের হাট পর্যন্ত যেতে হবে।
ধীরে ধীরে নদী আর সমুদ্র ভাঙ্গনে এই দ্বীপটার আয়তন ক্ষুদ্র হতে হতে ৮০ বর্গমাইলের একটা দ্বীপে পরিণত হয়েছে। জানা যায় পনেরো শতকে এর আকার ছিল ৬৫০ বর্গমাইল। এভাবেই এক সময় হয়ত এই দ্বীপটি হারিয়ে যাবে সমুদ্রগর্ভে।
সন্দ্বীপের মূল শহর এলাকা এনাম-নাহার মোড়ে রয়েছে ২/১ টি হোটেল। এছাড়াও আরও এগিয়ে সেনেরহাট এলাকায় রয়েছে একটি উন্নত মানের হোটেল। এছাড়া অনুমতি নিয়ে থাকতে পারেন উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলোতে। উপজেলায় মোটামুটি মানের বেশ কিছু খাবার হোটেল আছে তাই খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
সন্দ্বীপ কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে নদী পথে সন্দ্বীপ
সদরঘাট থেকে সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯ টায় লঞ্চ ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে । বর্তমান সময়ে এই ভ্রমণে একটু সমস্যা হবে, বিরক্ত বোধ করতে পারেন । তার অন্যতম কারন হল সন্দ্বীপের পশ্চিমে জেগে উঠা চর । যার কারনে উঠা নামাতে দীর্ঘ সময় এবং কষ্ট পোহাতে হবে ।
কুমিরা ঘাট থেকে সন্দ্বীপ
স্পীডবোট দ্বীপে আসা যাওয়ার জন্য বর্তমান সময়ের অন্যতম বাহন । দ্রুতগতি সম্পন্ন এই বাহন মাত্র কয়েক মিনিটে আপনাকে দ্বীপে পৌঁছে দিবে । এক্ষেত্রে গুনতে হবে ৩৫০ টাকা । এ ভ্রমনে আনন্দ আছে সময়ও বাঁচবে । উঠা নামায় সমস্যা কাদা মাখামাখি করতে হবে না । একাধিক সঙ্গী হলে একটা বোট ভাড়া করে যেতে পারেন । একজন বা দুইজন হলে নরমালি যাওয়ায় ভালো । এজন্য আপনাকে যেতে হবে কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট । আরও দুই একটা ঘাট রয়েছে তবে সন্দ্বীপ শহরে যেতে এটাই সহজ পথ এটাই বেস্ট ।
সদরঘাট থেকে সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯ টায় লঞ্চ ছেড়ে যায় সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে । বর্তমান সময়ে এই ভ্রমণে একটু সমস্যা হবে, বিরক্ত বোধ করতে পারেন । তার অন্যতম কারন হল সন্দ্বীপের পশ্চিমে জেগে উঠা চর । যার কারনে উঠা নামাতে দীর্ঘ সময় এবং কষ্ট পোহাতে হবে ।
ঢাকা থেকে সন্দ্বীপ
সন্দ্বীপ যেতে সড়কপথে ঢাকা-চট্টগ্রামী যেকোন দূরপাল্লার বাসে চড়ে বসুন। নামতে হবে কুমিরা। আপনার বাসকে কুমিরা স্টিমার ঘাট যাবার স্ট্যান্ডে নামিয়ে দিতে বলুন। সেখান থেকে অটো বা রিক্সায় চলে যান কুমিরা স্টিমার ঘাট। এখান থেকে যেতে হবে জলপথে সন্দ্বীপ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট। মূল ভূখণ্ড থেকে সন্দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র পথ এই জলপথ।চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ
চট্টগ্রাম শহরের যে কোন জায়গা থেকে সরাসরি চলে আসতে পারেন কুমিরা । সহজ এবং সময় বাচাতে ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারেন । সর্বোচ্চ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা খরচ পড়বে ।স্পীডবোট দ্বীপে আসা যাওয়ার জন্য বর্তমান সময়ের অন্যতম বাহন । দ্রুতগতি সম্পন্ন এই বাহন মাত্র কয়েক মিনিটে আপনাকে দ্বীপে পৌঁছে দিবে । এক্ষেত্রে গুনতে হবে ৩৫০ টাকা । এ ভ্রমনে আনন্দ আছে সময়ও বাঁচবে । উঠা নামায় সমস্যা কাদা মাখামাখি করতে হবে না । একাধিক সঙ্গী হলে একটা বোট ভাড়া করে যেতে পারেন । একজন বা দুইজন হলে নরমালি যাওয়ায় ভালো । এজন্য আপনাকে যেতে হবে কুমিরা সন্দ্বীপ ঘাট । আরও দুই একটা ঘাট রয়েছে তবে সন্দ্বীপ শহরে যেতে এটাই সহজ পথ এটাই বেস্ট ।
লঞ্চ / ট্রলার ( কাঠের তৈরি অনেকটা নৌকার মতই ) এতে করে কুমিরা ঘাট থেকে যেতে পারেন সন্দ্বীপ।
এখানে যাত্রী বহনযোগ্য লঞ্চ আছে , সাথে মাল বোঝায় করে এমন লঞ্চে করে যেতে পারেন । এটাতে সময় বাচবে খরচের পরিমাণ ও কম । উঠা নামায় খানিকটা সমস্যা হবে । এ যাত্রায় আনন্দ আছে তবে অতিরিক্ত যাত্রী , মাল বোঝায় থাকার কারন সেই আনন্দ ফিকে হতে পারে ।
আপনার ভ্রমণ নিরাপদ এবং আনন্দময় হোক
হাতে সময় থাকলে কষ্ট করে ভিজিট করে আসতে পারেন আমার অন্য ব্লগ থেকে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন